নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে সকালের নাস্তা
লিখেছেন জাহিদুল হক | 06.07.2013
একসঙ্গে ৩৪ জন নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে আড্ডা দিলেন সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রায় সাড়ে ছয়শো তরুণ বিজ্ঞানী ও গবেষক৷ জার্মানির দক্ষিণের ছোট্ট দ্বীপ-শহর লিন্ডাউতে শেষ হলো ৬৩তম নোবেল বিজয়ী সম্মেলন৷
৩০ জুন থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলন শেষ হয়েছে ৫ জুলাই, শুক্রবার৷ প্রতিবছর আয়োজিত এই সম্মেলনের এবারের বিষয় ছিল রসায়ন৷ তাই এই বিষয়ের নোবেল বিজয়ীরাই এসেছিলেন এবার৷ এমনকি, অংশ নেয়া তরুণ প্রজন্মও রসায়ন নিয়েই কাজ করছেন৷
সমাজ সংস্কৃতি | 22.03.2013
বাংলাদেশ থেকে তিনজন তরুণ গবেষক উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে৷ তাঁদের একজন মো: নুরুজ্জামান খান৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত রসায়নে এমএস করে বর্তমানে জার্মানির হাইডেলব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করছেন৷
সম্মেলন শেষে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে৷ তিনি বলেন, লিন্ডাউতে গিয়ে তাঁর দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ কারণ বিশ্বখ্যাত সব বিজ্ঞানীর সঙ্গে মতবিনিময় করা সম্ভব হয়েছে৷ শোনা গেছে তাঁদের অভিজ্ঞতা৷ জানানো গেছে নিজের কাজ সম্পর্কেও৷ ‘‘ব্যক্তিগতভাবে আমি কথা বলতে পেরেছি গেরহার্ড এর্টেল ও রব্যার্ট হুব্যার এর সঙ্গে৷ তাঁরা মোটামুটি আমার গবেষণার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন৷ তাই আমি নিজের গবেষণা বিষয়ে তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি৷\’’
নুরুজ্জামান বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখার পর নোবেল বিজয়ীরা বারবার আমাদের কাছ থেকে মন্তব্য জানতে চেয়েছেন৷ এর ফলে তাঁদের সঙ্গে আমরা সহজে যোগাযোগ করতে পেরেছি৷ এছাড়া, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের বক্তব্যও তাঁদের জানাতে পেরেছি৷\’\’
বিজ্ঞান পরিবেশ | 24.09.2012
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
৬৩ তম লিন্ডাউ সম্মেলন
জার্মানির দক্ষিণের ছোট্ট দ্বীপ লিন্ডাউ থেকে একদিকে অস্ট্রিয়া, আরেকদিকে সুইজারল্যান্ড দেখা যায়৷ অপরূপ সুন্দর এই শহরে সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রায় সাড়ে তিনশো তরুণ বিজ্ঞানী আড্ডা দিচ্ছেন নোবেল পাওয়া ৩৪ বিজ্ঞানীর সঙ্গে৷ প্রতি বছর লিন্ডাউ-তে নোবেল বিজয়ীদের সঙ্গে তরুণদের এমন সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়৷ এবার তার ৬৩তম পর্ব৷ আর এবার এসেছেন রসায়নে নোবেল প্রাপ্ত বিজ্ঞানীরা৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
প্যানেল আলোচনা
৩০ জুন, ২০১৩’তে শুরু হওয়া লিন্ডাউ সম্মেলনে প্রতিদিনই নোবেল বিজয়ীরা বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেকচার দিচ্ছেন৷ সেই সঙ্গে শুনছেন তরুণদের কথা৷ বিনিময় করছেন তাঁদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান৷ সম্মেলন চলবে ৫ জুলাই পর্যন্ত৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
বিশেষজ্ঞ বক্তব্য
ফ্রান্সের এই রসায়নবিদ জ্যঁ-মারি লেন ১৯৮৭ সালে নোবেল জয় করেন৷ লিন্ডাউ সম্মেলনে তিনি তরুণদের তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
নোবেল বিজয়ী যখন বন্ধু
ছবিতে একজন নোবেলজয়ীকে কয়েক তরুণের সঙ্গে খাবার টেবিলে আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে৷ এর ফলে আরও অন্তরঙ্গভাবে গুণী বিজ্ঞানীদের সঙ্গে মিশতে পারছেন তরুণ গবেষকরা৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
নিজেদের মধ্যেও আলোচনা
সারা বিশ্ব থেকে আসা তরুণ বিজ্ঞানীরা যে শুধু জ্ঞানী-গুণীদের কথা শুনছেন তাই নয়৷ তারা নিজেদের মধ্যেও যার যার গবেষণা নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
মনোযোগী শ্রোতা
লিন্ডাউ সম্মেলনের প্রতিটি পর্বই দারুণ গুরুত্ব দিয়ে উপভোগ করছেন অংশগ্রহণকারীরা৷ কেননা অল্প বয়সে এতজন নোবেল বিজয়ীর কথা শুনতে পারাটা তাদের জন্য যেমন এক পরম পাওয়া, তেমনি উৎসাহমূলকও৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
বাদ নেই বিনোদনও
লিন্ডাউ সম্মেলনে যে শুধু গুরুগম্ভীর বিষয় নিয়েই আলোচনা হচ্ছে তা নয়৷ অংশগ্রহণকারীদের উজ্জীবিত রাখতে ও তাদের মনে প্রাণের সঞ্চার জাগাতে আয়োজন করা হচ্ছে বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানও৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
লিন্ডাউ-তে বাংলাদেশ
বেশ কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানীরাও অংশ নিচ্ছেন লিন্ডাউ সম্মেলনে৷ এবার এসেছেন তিনজন৷ এর মধ্যে একজন ড. আবু বিন ইমরান৷ তিনি বুয়েটের একজন সহকারী অধ্যাপক৷ জাপানে পিএইচডি করার সময় তিনি এক বিশেষ ধরনের জেল উদ্ভাবন করেন, যেটা রোগ নির্ণয় ও হাড়ের তরুণাস্থি চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারবে৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
চিংড়ির খোসা দিয়ে চর্বি কমানো!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত রসায়ন বিষয়ে পড়াশোনা করা তসলিম উর রশিদ এর গবেষণার বিষয় চিংড়ির খোসা৷ তিনি খোসায় থাকা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থেকে এমন একটি বিষয় উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন যেটা চর্বি জাতীয় খাবার খেলেও তার ক্ষতির পরিমাণটা কমাতে সহায়তা করবে৷
নোবেল বিজয়ীদের সান্নিধ্যে তিন বাংলাদেশি
পিতামাতার পরিচয় খোঁজা আরও সহজ হবে
মো. নুরুজ্জামান খান হীরা বর্তমানে জার্মানির হাইডেলব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত আছেন৷ তাঁর গবেষণার বিষয় বায়োলজিক্যাল চিপ, যেটা দিয়ে রোগ নির্ণয় সহ আরও অনেক কাজ সহজ ও কম খরচে করা যাবে৷
সম্মেলন চলাকালীন সময়ে প্রতিদিন সকালে নোবেল বিজয়ীদের সঙ্গে নাস্তার আয়োজন করা হয়েছিল, যার নাম ‘সায়েন্স ব্রেকফাস্ট\’৷ অর্থাৎ নাস্তার ফাঁকে ফাঁকে আলোচনা৷ এতে করে তরুণ বিজ্ঞানীরা নোবেল বিজয়ীদের আরো কাছাকাছি যেতে পেরেছেন৷
লিন্ডাউ সম্মেলনের কারণে সারা বিশ্ব থেকে আসা তরুণ গবেষকরা নিজেদের মধ্যেও আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছেন৷ ফলে একই বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন, এমন সব তরুণ বিজ্ঞানীরা একে অপরের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে পেরেছেন৷ ‘‘এমন অনেক তরুণ বিজ্ঞানীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে যাঁদের সঙ্গে ভবিষ্যতেও আলোচনা করা যাবে,\’\’ বলেন নুরুজ্জামান৷
তিনি ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক ড. আবু বিন ইমরান ও ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক তসলিম উর রশিদ৷
এর মধ্যে ইমরান জাপানে পিএইচডি করার সময় এক বিশেষ ধরনের জেল উদ্ভাবন করেন, যেটা রোগ নির্ণয় ও হাড়ের তরুণাস্থি চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারবে৷ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত রসায়ন বিষয়ে পড়াশোনা করা তসলিম রশিদের গবেষণার বিষয় চিংড়ির খোসা৷ তিনি খোসায় থাকা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থেকে এমন একটি বিষয় উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যেটা চর্বি জাতীয় খাবার খেলেও তার ক্ষতির পরিমাণটা কমাতে সহায়তা করবে৷
নির্বাচিত প্রতিবেদন
- সমাজ সংস্কৃতি | 22.03.2013
জাহিদুল হক
- বিজ্ঞান পরিবেশ | 24.09.2012
- বিজ্ঞান পরিবেশ | 14.07.2012
- বিজ্ঞান পরিবেশ | 04.07.2013
জাহিদুল হক